সমস্ত লেখাগুলি

সাম্প্রদায়িকতা : একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা -
অনাবিল সেনগুপ্ত
Nov. 20, 2024 | সাম্প্রদায়িকতা | views:816 | likes:2 | share: 2 | comments:0

"যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,

তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো।"

১৯৪০-এর দশকে ব্রিটিশ শাসিত ভারতের গণপরিষদের দুটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ছিল মুসলিম লিগ ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। ১৯৪৬ সালে ক্যাবিনেট মিশন ভারতীয় নেতৃবর্গের হাতে ব্রিটিশ ভারতের শাসনভার তুলে দেওয়ার প্রস্তাব রাখে। এই প্রস্তাবে একটি নতুন ভারত অধিরাজ্য ও তার সরকার গঠনেরও প্রস্তাব জানানো হয়। এর অব্যবহিত পরে, একটি বিকল্প প্রস্তাবে হিন্দুপ্রধান ভারত ও মুসলমানপ্রধান পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কংগ্রেস বিকল্প প্রস্তাবটি সম্পূর্ণত প্রত্যাখ্যান করে। এই প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে এবং একটি পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের দাবিতে মুসলিম লিগ ১৯৪৬ সালের ১৬ অগস্ট একটি সাধারণ ধর্মঘটের (হরতাল) ডাক দেয়। এই প্রতিবাদ আন্দোলন থেকেই কলকাতায় এক ভয়ংকর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্ম হয়। মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শহরে চার হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষ প্রাণ হারান ও এক লক্ষ বাসিন্দা গৃহহারা হন [গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং ১৯৪৬]। কলকাতার দেখাদেখি দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে নোয়াখালী, বিহার, যুক্তপ্রদেশ (অধুনা উত্তরপ্রদেশ) পাঞ্জাব ও উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশেও। তবে সর্বাপেক্ষা ভীতিপ্রদ দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছিল কলকাতা ও নোয়াখালীতে (অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রে)। কয়েক লক্ষ মানুষকে হত্যা, আহত, ধর্ষণ, গৃহহারা করে। ক্ষমতার হস্তান্তর নিয়ে দুই ধর্মের নিরীহ সাধারণ মানুষের পরস্পরের মনে অবিশ্বাস আর শত্রুতার বীজরোপণ হয়ে গিয়েছিল। আর এই ঘটনাই ভারত বিভাগের বীজ বপন করেছিল এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন ধর্মীয় দাঙ্গাফাসাদের জড় রূপে দেখা গেছে।

সাম্প্রদায়িকতা বা সাম্প্রদায়িকতা (ইংরেজি: Communalism) হচ্ছে এক ধরনের মনোভাব। কোন ব্যক্তির মনোভাবকে তখনই সাম্প্রদায়িক বলে আখ্যা দেওয়া হয় যখন সে এক বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ভুক্তির ভিত্তিতে অন্য এক ধর্মীয় সম্প্রদায় এবং তার অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধচারণ এবং ক্ষতিসাধন করতে প্রস্তুত থাকে। এ ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তিবিশেষের ক্ষতিসাধন করার মানসিক প্রস্তুতি সেই ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ পরিচয় অথবা বিরুদ্ধতা থেকে সৃষ্ট নয়। ব্যক্তিবিশেষ এ ক্ষেত্রে গৌণ, মুখ্য হলো সম্পদায়।ধর্মনিষ্ঠার সাথে সম্পর্ক আছে ধর্মীয় তত্ত্ব এবং আচার বিচারের। সাম্প্রদায়িকতার যোগ আছে সম্পদায়ের সাথে। অর্থাৎ ধর্মনিষ্ঠার ক্ষেত্রে ব্যক্তির নিজের আচরণ এবং ধর্মবিশ্বাসের গুরুত্ব বেশি। সাম্প্রদায়িকতার ক্ষেত্রে নিজের ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতি বিশেষ এক জাতীয় আনুগত্যের গুরুত্ব বেশি।

কথা হচ্ছে, একটা বহুত্ববাদী দেশ ভারতে এই ধরণের অসহিষ্ণুতার ঘটনা নতুন নয়৷ ভারতের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে এই রকম অ-সহনশীলতা আগেও ছিল, এখনও আছে৷ অযোধ্যায় রামজন্মভূমির ওপরে বাবরি মসজিত নির্মাণ, হিন্দু মৌলবাদীদের হাতে তার ধ্বংস কিংবা দেশের বিভিন্ন ভাগে বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, শিখধর্মের অপমানের বদলা নিতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা, ১৯৯৩ সালে মুম্বই দাঙ্গা, জরুরি অবস্থা ঘোষণা, ২০০২ সালে গুজরাটের গোধরা গণহত্যা, অতি সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের দাদরিতে গোমাংস নিয়ে গণপিটুনিতে মহম্মদ আখলাকের মৃত্যু, যুক্তিবাদী লেখক কালবুর্গির খুন হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে, যে দলই সরকারে থাকুক না কেন৷ পশ্চিমবঙ্গেও ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, সরকারের একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়কে বিশেষ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। এই প্রচার পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাসীদের প্রচারের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটসহ বিস্তীর্ণ অংশ ভয়ঙ্কর সাম্প্রদায়িক হিংসা দেখেছে গত বছরেই। হিংসা দেখেছে হাওড়া, হিংসা দেখেছে উত্তরবঙ্গের ধুলাগড়সহ নানা এলাকা। বর্তমানে কাকিনাড়া, পুরুলিয়া, রানিগঞ্জ আসানসোলের একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীর মিছিলকে (অস্ত্র নিয়ে রাজনৈতিক আস্ফালন) কেন্দ্র করে সংঘর্ষ যা দাঙ্গার রূপ নেয়। পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক ক্ষমতা (সমগ্র দেশের মত) দখলে সাম্প্রদায়িকতা ইস্যু করে তুলতে চাইছে ক্ষমতালোভীর দল। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে, পুঁজিপতিদের ধনে বলিয়ান হয়ে বিরোধী আদর্শকে গুড়িয়ে (বর্তমানে লেনিনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণের মূর্তি ভাঙ্গা হল) দিতে পিছপা নয় ধর্মীয় রাজনৈতিক নেতারা।

ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সালেই মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে লন্ডনে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, তাতে নানা দৃষ্টান্ত দিয়ে দাবি করা হয়েছে দুটো ক্ষেত্রে ভারতের পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। "সাম্প্রদায়িকতা এবং বাক স্বাধীনতা।" অ্যামনেস্টির রিপোর্ট বলছে, গত এক বছরে ভারতে সাম্প্রদায়িক হিংসার শত শত ঘটনা ঘটেছে যা প্রশাসন রুখতে পারেনি। বরং কোনও কোনও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতার সরাসরি হিংসায় প্ররোচনা দিয়েই বক্তৃতা দিয়েছেন।

গরু পাচার বা গরুর মাংস খাওয়া হচ্ছে, শুধু এই সন্দেহের বশে মুসলিমকে জনতা পিটিয়ে মেরেছে। মুজফফরনগরে ২০১৩র দাঙ্গায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে ক্ষমতাসীন রাজনীতিক ও পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের দিকেই। অ্যামনেস্টির রিপোর্টে জানাচ্ছে , ‘‘এটা স্পষ্ট যে ভারতে সাম্প্রদায়িক, জাতিগত ও ধর্মীয় হিংসার ঘটনা বাড়ছে। যদিও ভারতে এই ধরনের ঘটনা ঐতিহাসিকভাবেই ঘটে আসছে, এখন যেটা দেখা যাচ্ছে যে শুধু একজন মানুষকে তার ধর্মের কারণে বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে।’’ আরও উল্লেখ্য , ‘‘কীভাবে মুসলিমরা আক্রান্ত হচ্ছেন, মণিপুরে আদিবাসীরা নিজেদের অধিকার আদায়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। সবচেয়ে যেটা উদ্বেগের কথা, ধর্মের কারণে এই বৈষম্য করার জন্য কাউকে কিন্তু বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না।’’

শুধু সাম্প্রদায়িকতা নয় – অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সরব হয়েছে ভারতে ইদানীং বাক স্বাধীনতার অধিকার যেভাবে খর্ব হচ্ছে তার বিরুদ্ধেও। সরকার ভারতে ভিন্নমতকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে। ‘‘শুধু আপনার মতের বিপক্ষে কথা বললেই যেভাবে তাকে দেশ বিরোধী বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে – তাতে আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ প্রতিবাদের বিরুদ্ধে চরম অ-সহিষ্ণুতার পরিচয় দিচ্ছে”। 

২০১৪র নির্বাচনের পর থেকেই ভারতে যে কোনও ইস্যুকে একটা সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। ‘‘ক্ষমতাসীন দলই হোক বা আরএসএসের মতো তাদের সহযোগী সংগঠন – এরা তখন থেকেই প্রতিটা বিষয়কে একটা ধর্মীয় মেরুকরণের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে।’’ ‘‘কখনও হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিয়েকে লাভ জিহাদ তকমা দিয়ে, কখনও গরুর মাংস নিষিদ্ধ দাবি করার দাবি তুলে, কখনও বা যোগাসন বাধ্যতামূলক করতে চেয়ে পুরো পরিবেশটাকে বিষাক্ত করে তোলা হচ্ছে। আশঙ্কা, ২০১৯য়ে দেশে পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’’

দেশে-বিদেশে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার পরিচয়কে সেজন্য কাঠগোড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে এবং হবে সন্দেহ নেই৷ সবথেকে বড় কথা, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলিকে ধান্দা বন্ধ করতে হবে৷ প্রতিবাদ এক কথা আর রাজনৈতিক ফায়দা লোটা অন্য জিনিস৷ ধর্মীয় অসহনশীলতা, জাতপাত, লিঙ্গ বৈষম্য কিংবা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে যদি দাড়িপাল্লায় মাপা যায়, তাহলে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সত্যিই কি মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে? এটা কি একটা সাময়িক প্রতিক্রিয়া? এটা কি যথাসময়ে থিতিয়ে যাবে?

অপরাধ ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, জাতিসত্তা, আঞ্চলিকতা, আধিপত্য, প্রশাসনিক দুর্বলতা প্রভৃতি কারণে বৃহত্তর সমাজে পারস্পরিক অসহিষ্ণুতা সৃষ্টি হতে পারে। এ অসিষ্ণুতা শুধু সমাজেই নয়, রাষ্ট্রের গোষ্ঠী, ধর্ম, জাতিসত্তার প্রতি অসহিষ্ণুতা সৃষ্টি হতে পারে। হিটলারের আমলে জার্মানি ইহুদি জাতির প্রতি অসহিষ্ণু হয়ে তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত, নির্যাতন ও হত্যা করেছিল। তবে সাধারণত সরকারের ঔদাসীন্য বা নেপথ্য উস্কানির কারণে এমন ঘৃণার উদ্রেক হতে পারে যাতে এক সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়কে নির্মূল করার অপরাধে লিপ্ত হতে পারে। এটি হচ্ছে ঘৃণাজাত অপরাধ। ঘৃণাজাত অপরাধের সবচেয়ে বড় প্রকাশ হচ্ছে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে একে অপরকে নির্মূল করার প্রবণতা। এ অপরাধ এখন একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। অপরাধ মনোবিজ্ঞানীদের মতে, কোনো ধর্মীয় বা রাজনৈতিক মতবাদ প্রতিষ্ঠা বা শ্রেষ্ঠতর রাখার জন্য হিংসা, দাঙ্গা, হামলা, হত্যাকান্ড, শিল্প-সংস্কৃতির প্রতীক বিনষ্টিকরণ প্রভৃতি হলো এ প্রকার ঘৃণারই ফল।

সংবিধানের প্রস্তাবনা অংশে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র রূপে বর্ণিত হয়েছে। ভারতের আইন ও বিচার ব্যবস্থাও উক্ত সংবিধানের প্রস্তাবনা গুলিকে সুরক্ষিত করে। রাজনৈতিক দল গুলো উক্ত প্রস্তাবনাকে সুরক্ষিত রাখবে, সেই অঙ্গীকারে "দ্য রিপ্রেজেন্টেসন অফ পিপলস অ্যাক্ট ১৯৫১ (অ্যামেনমেন্ট ১৯৮৯) এর ২৯ক ধারায়" দায়বদ্ধ হয়। কার্যক্ষেত্র নির্বাচন কমিশন "ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়" এর দশা হতে পারে। এটাও প্রশ্ন আইনের প্রয়োগের অভাবে ভারতে রাজনৈতিক দল গুলোর এই বাড়বাড়ন্ত। 

৩রা জানুয়ারি, ২০১৭, ধর্ম, বর্ণ, জাতি, সম্প্রদায় ও ভাষার ভিত্তিতে ভোট চাওয়া বা ভোট না দিতে প্ররোচিত করাকে দুর্নীতিপূর্ণ আচরণ বলেই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চে চার জন বিচারপতি এ ব্যাপারে জানিয়েছেন, কেবল প্রার্থী নয়, ভোটারদের ধর্ম-বর্ণের ধুয়ো তুলেও প্রচার করা যাবে না। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৩(৩) ধারায় ধর্ম, জাতি, ভাষা, সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে ভোট চাওয়া অবশ্য এমনিতেই নিষিদ্ধ। শীর্ষ আদালত বলেছে— কেবল প্রার্থী নয়, প্রচারে আনা যাবে না ভোটারদের ধর্ম, জাতি, ভাষার কথাও। এমনকী প্রার্থীর এজেন্টের সামাজিক পরিচয়ের জোরেও ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করা যাবে না। কিন্তু রায় কার্যকর করা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে সন্দিহান অনেক বিশ্লেষকগণ। তাঁদের কথায়, ‘‘ধর্ম, জাতপাতের ভিত্তিতে ভোট চাইলে প্রার্থিপদ বাতিল করার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নেই। তারা বড়জোর আদালতে যেতে পারে।’’ এই বিষয়টি নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করতে হলে আইন করে কমিশনকে আরও ক্ষমতা দিতে হবে। কিন্তু তা করতে ভয় পায় সব দলই। কারণ ধর্ম, জাতপাতের অঙ্ককে অস্বীকার করার ক্ষমতা তাদের নেই।

রাজ্যের বা দেশের বা পৃথিবীর কোনও প্রান্তেই সাম্প্রদায়িক হিংসা কাম্য নয়। এই হিংসা মানবতার ঘোরতর অপমান। কোথাও অশান্তি চাই না, কোনও প্রান্তেই হিংসার আগুন চাই না আমরা। আসানসোল-রানিগঞ্জ যেমন হিংসা চায় না, বসিরহাট বা ধুলাগড়ও তেমনই চায় না। চায় না উত্তরপ্রদেশের দাদরি বা মুজাফফরনগর, চায় না গুজরাতের গোধরা , চায় না বিহার। সবাই শান্তিতেই বাঁচতে চান, সকলেই জীবনে সুস্থিতি চান, পারস্পরিক সম্প্রীতি চান, জীবনধারণের অধিকার চান। তা সত্ত্বেও অশান্তি হচ্ছে, সাম্প্রদায়িকতার আগুন লেলিহান শিখা নিয়ে মাঝে-মধ্যেই আত্মপ্রকাশ করছে। আগুনের শিখাটা লকলক করে উঠতে পারছে কারণ, সাম্প্রদায়িকতার বীজ নানা রূপে আমাদের অনেকের মধ্যেই কোথাও না কোথাও রয়ে গিয়েছে। সেই বীজই আগুনে ইন্ধন জোগাচ্ছে। সেই বীজ রয়েছে বলেই ধর্মীয় সঙ্কীর্ণতার কারবারিরা আমাদের অনেককেই আজও ফাঁদে ফেলতে পারছে।

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86929